Table of Contents
ক্রোমোজোম
নিউক্লিয় জালিকা থেকে সৃষ্ট ,প্রোটিন ও নিউক্লিক অ্যাসিড দ্বারা গঠিত ,স্বপ্রজননশীল যে সূত্রাকার অংশ জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্যাবলী বহন করে এবং প্রজাতির পরিব্যাক্তি ,প্রকরণ ও বিবর্তনে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে তাকে ক্রোমোজোম বলে।
ক্রোমোজোমের সংখ্যা
কোন প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেকটি জীবের দেহকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা সাধারণত নির্দিষ্ট অর্থাৎ ধ্রুবক ,যেমন –মানুষের দেহকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা 23 জোড়া অর্থাৎ 46টি ,ড্রসোফিলা নামক মাছির ক্রোমোজোম সংখ্যা 4 জোড়া অর্থাৎ 8টি ,ধ্যান গাছের ক্রোমোজোম সংখ্যা 12 জোড়া ,গম গাছের ক্রোমোজোম সংখ্যা 21 জোড়া।দেহকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা দ্বিগুন সেটে এবং জনন কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা একটি সেটা থাকে। দেহকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যাকে ডিপ্লয়েড এবং জনন কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যাকে হ্যাপ্লয়েড বলে।হ্যাপ্লয়েড সংখ্যক ক্রোমোজোমকে জিনোম বলে।
ক্রোমোজোমের প্রকারভেদ
কাজ অনুসারে ক্রোমোজোম দুপ্রকারের –
1. অটোজোম অর্থাৎ দেহগঠনকারী ক্রোমোজোম
2. সেক্স ক্রোমোজোম অর্থাৎ লিঙ্গ নির্ধারণকারী ক্রোমোজোম।
মানুষের কোষে 44 টি অটোজোম এবং একজোড়া সেক্স ক্রোমোজোম থাকে।
ক্রোমোজোমের গঠন
ক্রোমোজোমের আকারে সাধারণত দণ্ডাকার বা সূত্রাকার হয়। সেন্ট্রোজোমের অবস্থান অনুযায়ী ক্রোমোজোম ইংরাজী বর্ণমালার ‘I’,’L’,ও’V’ আকৃতি বিশিষ্ট হয়।
একটি আদর্শ ক্রোমোজোম(মেটাফেজ দশায় দৃশ্য) প্রধান পাঁচটি অংশ নিয়ে গঠিত।
1.ক্রোমাটিড(Chromatid):প্রত্যেক ক্রোমোজোম লম্বালম্বিভাবে বিভক্ত হওয়ারপর (মেটাফেজ দশায়)যে দুটি সমান আকৃতির সুতোর মত অংশ গঠন করে তাদের প্রত্যেকটিকে ক্রোমাটিড বলে।
2. সেন্ট্রোমিয়ার(Centromere):প্রত্যেক ক্রোমোজোমে একটি নির্দিষ্ট সংকোচ স্থান থাকে,একে সেন্ট্রোমিয়ার বা মুখ্য খাঁজ বলে।কোষ বিভাজনের সময় মূখ্য খাঁজের মধ্যে একটি স্বচ্ছ অঞ্চল দেখা যায় যার মধ্যে এক বা একাধিক ক্ষুদ্র দানা বা গ্রানিউল থাকে।ক্রোমোজোমের এই স্বচ্ছ অংশটিকে সেন্ট্রোমিয়ার বলে।সেন্ট্রোমিয়ার প্রকৃতপক্ষে 4টি ক্ষুদ্র দানাদার পদার্থ নিয়ে গঠিত।এই পদার্থকে কাইনোসোম বা স্ফীরিউল বলে।
3. পেলিকল(Pelicle):ক্রোমোজোম যে আবরণ দিয়ে আবৃত থাকে তাকে পেলিকল বলে।আধুনিক বিজ্ঞানীদের ধারণা ক্রোমোজোমে পেলিকল থাকে না।
4.ধাত্ৰ(Matrix):ক্রোমোজোমের পেলিকল অর্থাৎ আবরণীর মধ্যে যে সান্দ্র(ঘন)তরল পদার্থ থাকে তাকে ধাত্র বলে।ধাত্রের মধ্যে ক্রোমাটিড সূত্র ভাসমান অবস্থায় থাকে। আধুনিক বিজ্ঞানীরা ক্রোমোজোমে ধাত্রের উপস্থিতি অস্বীকার করেন।
5. টেলোমিয়ার(Telomere):প্রত্যেক ক্রোমোজোমের মেরুবর্তী প্রান্তদেশকে টেলোমিয়ার বলে। কোন কোন ক্রোমোজোমের মুখ্য খাঁজ ব্যতিত এক বা একাধিক খাঁজ ক্রোমোজোমের একটি বা উভয় বাহুতে দেখা যায় এই রকম খাঁজকে গৌণ খাঁজ বলে।গৌণ খাঁজটি টেলোমিয়ারের দিকে অবস্থান করলে টেলোমিয়ার অংশটিকে তখন বাল্বের মত দেখায় এই রকম বাল্বের মোট আকৃতির টেলোমিয়ারকে স্যাটেলাইট বলে।স্যাটেলাইট যুক্ত ক্রোমোজোমকে স্যাট -ক্রোমোজোম বলে।
ক্রোমোজোমের রাসায়নিক গঠন
ক্রোমোজোম প্রধানত হিস্টোন ও হিস্টোনবিহীন প্রোটিন ,নিউক্লিক অ্যাসিড (DNA ও RNA)এবং কয়েকটি ধাতব আয়ন (Ca, Mg, Fe ইত্যাদি )দিয়ে গঠিত।প্রাথমিকভাবে ক্রোমোজোমে 90% DNA এবং ক্ষারীয় প্রোটিন (হিস্টোন)এবং 10%RNA ও আম্লিক প্রোটিন থাকে।
Adda247 ইউটিউব চ্যানেল – Adda247 Youtube Channel
Adda247 টেলিগ্রাম চ্যানেল – Adda247 Telegram Channel