Table of Contents
Gupta Era
Gupta Era: গুপ্ত যুগ, ভারতের স্বর্ণযুগ নামেও পরিচিত, প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়কে প্রতিনিধিত্ব করে, যা প্রায় 320 CE থেকে 550 CE পর্যন্ত বিস্তৃত। এই যুগটি শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান এবং দর্শনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করেছে। এই আর্টিকেলে, গুপ্ত যুগ, ইতিহাস, শাসক, প্রতিষ্ঠাতা, এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
Gupta Era, History
গুপ্ত যুগের প্রতিষ্ঠা ও উত্থান: গুপ্ত যুগটি 320 খ্রিস্টাব্দের দিকে শ্রী গুপ্ত দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যার উৎপত্তি মগধ, বর্তমান বিহারে। শ্রী গুপ্তের রাজবংশ একটি ছোট আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে শুরু হয়েছিল এবং ধীরে ধীরে কৌশলগত বিবাহ, জোট এবং সামরিক বিজয়ের মাধ্যমে এর অঞ্চলকে প্রসারিত করেছিল। যাইহোক, প্রথম চন্দ্রগুপ্তের শাসনামলেই গুপ্ত সাম্রাজ্যের বিকাশ ঘটে, যা গুপ্ত যুগের সূচনা করে।
অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি: গুপ্ত যুগে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করেছিল, যেখানে ভারতের সীমানা এবং তার বাইরেও ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি হয়েছিল। গুপ্ত শাসকরা কৃষিকে উন্নীত করেছিলেন, ব্যাপক সেচ ব্যবস্থা তৈরি করেছিলেন এবং একটি স্থিতিশীল ও দক্ষ প্রশাসন বজায় রেখেছিলেন যা সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে অবদান রেখেছিল।
সাংস্কৃতিক এবং শৈল্পিক অর্জন: গুপ্ত শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় শিল্প, সাহিত্য ও স্থাপত্যের বিকাশ ঘটে। গুপ্ত যুগ দিল্লির বিখ্যাত লৌহ স্তম্ভ সহ ভারতীয় শিল্পের সবচেয়ে মহৎ নিদর্শন তৈরি করেছিল। গুপ্ত রাজবংশ সাহিত্যের শ্রেষ্ঠত্বের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল, সংস্কৃত সাহিত্য নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছিল, কালিদাস এবং বরাহমিহিরের মতো আলোকিত ব্যক্তিদের ধন্যবাদ।
শিক্ষাগত অগ্রগতি: গুপ্ত যুগে শিক্ষা ও শিক্ষার প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দেওয়া হয়েছিল। নালন্দা এবং তক্ষশীলার মতো উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলি বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যকলাপের কেন্দ্র হিসাবে উন্নতি লাভ করেছিল এবং দূর-দূরান্ত থেকে পণ্ডিতদের আকৃষ্ট করেছিল। গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা এবং চিকিৎসাবিদ্যাও এই সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখেছিল।
পতন: সমস্ত মহান সাম্রাজ্যের মতো, গুপ্ত রাজবংশ অবশেষে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল যা এর পতনের দিকে পরিচালিত করেছিল। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক বিদ্রোহ এবং বিদেশী উপজাতিদের দ্বারা আগ্রাসন সবই সাম্রাজ্যের দুর্বলতায় অবদান রাখে। খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীর মাঝামাঝি, গুপ্ত রাজবংশ ভেঙে যায়, গুপ্ত যুগের সমাপ্তি ঘটে।
Gupta Era: Rulers
গুপ্ত শাসকদের তালিকা নিচের টেবিলে দেখুন
শাসক | রাজত্ব (CE) | মন্তব্য |
শ্রী-গুপ্ত I | C. খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতাব্দীর শেষের দিকে |
|
ঘটোৎকচ | 280/290-319 CE | |
চন্দ্র-গুপ্ত I | 319-335 CE |
|
সমুদ্র -গুপ্ত | 335-375 CE |
|
রাম -গুপ্ত | ||
দ্বিতীয় চন্দ্র-গুপ্ত (বিক্রমাদিত্য) | 375-415 CE |
|
কুমার-গুপ্ত I | 415-455 CE |
|
স্কন্দ -গুপ্ত | 455-467 CE |
|
পুরু -গুপ্ত | 467-473 CE | |
কুমার-গুপ্ত দ্বিতীয় ক্রমাদিত্য | 473-476 CE | |
বুদ্ধ-গুপ্ত | 476-495 CE |
|
নরসিংহ -গুপ্ত বালাদিত্য | 495-530 CE | |
কুমার-গুপ্ত তৃতীয় | 530-540 CE | |
বিষ্ণু-গুপ্ত চন্দ্রাদিত্য | 540-550 CE |
Gupta Era: Some Important Points
- গুপ্ত বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শ্রীগুপ্ত।
- এরপরে সিংহাসনে বসেন ঘটোৎকচ গুপ্ত।
- এই বংশের প্রথম স্বাধীন ও শক্তিশালী রাজা ছিলেন প্রথম চন্দ্রগুপ্ত।
- আনুমানিক 320 খ্রিস্টাব্দে তিনি গুপ্তাব্দ নামে একটি নতুন শতাব্দীর সূচনা করেন।
- প্রথম চন্দ্রগুপ্ত লিচ্ছবি বংশের রাজকন্যা কুমার দেবীকে বিবাহ করেন।
- প্রথম চন্দ্রগুপ্তের পরে সিংহাসনে বসেন সমুদ্রগুপ্ত।
- তিনি নিজেকে লিচ্ছবী দৌহিত্র বলে অভিহিত করতেন।
- তাঁর সভা কবি হরিষেনের সংস্কৃত ভাষায় রচিত এলাহাবাদ প্রশস্তি থেকে তার রাজ্য জয় সম্পর্কে জানা যায়।
- তিনি দক্ষিণ ভারতের 12 জন রাজাকে পরাজিত করে বশ্যতা শিকারের বিনিময়ে তাদের রাজ্য ফিরিয়ে দেন।
- তার এই নীতি কে ঐতিহাসিকেরা ‘ধর্ম বিজয়’ নীতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
- তিনি উত্তর ভারতের 9 জন রাজাকে পরাজিত করে সাম্রাজ্যে সীমানা বৃদ্ধি করেন।
- ঐতিহাসিক স্মিথ তাকে ভারতের নেপোলিয়ন বলে উল্লেখ করেছেন।
- তিনি ছিলেন বিষ্ণুর উপাসক এবং হিন্দু ধর্মের পৃষ্ঠপোষক।
- তার উপাধি ছিল-পরক্রমাস্ক, অপ্রতিরোধ্য, কবিরাজ বা কবিদের সেরা।
- সমুদ্রগুপ্তের পরে সিংহাসনে বসেন রামগুপ্ত।
- রামগুপ্তের অপদার্থতার জন্য দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত তাকে সিংহাসনচ্যুত করে নিজের সিংহাসনে বসেন।
- আনুমানিক 375 খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে বসেন এবং বিক্রমাদিত্য উপাধি ধারণ করেন।
- তিনি শকদের পরাজিত করে শকারি উপাধি ধারণ করেন।
- পাটলিপুত্রে তার রাজধানী থাকা সত্বেও তিনি উজ্জয়িনীতে রাজধানী স্থাপন করেন।
- তাঁর রাজত্বের সময়ে বিখ্যাত চীনা পরিব্রাজক ফা- হিয়েন ভারতে আসেন।
- ভারতে ফা -হিয়েন প্রায় 10 বছর অবস্থান করেছিলেন।
- তিনি ভারতে প্রথম রৌপ-মুদ্রা প্রবর্তন করেন।
- তার কন্যা প্রভাবতী গুপ্ত ছিলেন প্রাচীন ভারতের প্রথম শাসক।
- দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের পর সিংহাসনে বসেন প্রথম কুমার গুপ্ত।
- তার উপাধি ছিল মহেন্দ্রাদিত্য।
- তিনি নালন্দায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন।
- প্রথম কুমার গুপ্ত এর মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসেন স্কন্দ গুপ্ত।
- তাঁর সময়কালে ভারতের হুন আক্রমণ ঘটে।
- তিনি হুনদের কঠোর হাতে দমন করে সাম্রাজ্যকে রক্ষা করেন।
- ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার তাকে ভারতের রক্ষাকারী হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
- তিনি সুদর্শন রথ সংস্কার করেন।
- তিনি ‘দেবরাজ’ উপাধি ধারণ করেন।
- এই বংশের শেষ শাসক ছিলেন দ্বিতীয় জীবিত গুপ্ত।
- অমরসিং ছিলেন দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের সভাকবি।
- তিনি ‘অমরকোষ’গ্রন্থটি রচনা করেন।
- প্রাচীন ভারতের স্বর্ণযুগ বা ধ্রুপদী যুগ বলা হয় গুপ্তযুগকে।
Quick Links | |
Indus Valley Civilization | Buddhism in Bengali |
Jainism in Bengali | Vedas In Bengali |
Mauryan Dynasty |
The Sixteen Mahajanapadas in Bengali |
Epics in Bengali |
ADDA247 Bengali Homepage | Click Here |
ADDA247 Bengali Study Material | Click Here |