Table of Contents
ভারতের নতুন পার্লামেন্ট
ভারতের নতুন পার্লামেন্ট: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, 28শে মে 2023 তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন পার্লামেন্টের উদ্বোধন করেছেন। কর্ণাটকের শ্রীঙ্গেরি মঠের পুরোহিতদের সাথে প্রধানমন্ত্রী নতুন পার্লামেন্টের উদ্বোধনের জন্য ঈশ্বরের আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক “গণপতি হোম”-এ অংশ নিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা এবং বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা নতুন পার্লামেন্টের প্রার্থনা সভায় যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন পার্লামেন্ট নির্মাণ ও উন্নয়নে সহায়তাকারী কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ভারতের নতুন পার্লামেন্ট: লোকসভা স্পিকারের চেয়ারে ‘সেঙ্গোল’ স্থাপন করা হয়েছে
ঐতিহ্যবাহী “নাদস্বরাম” সুর এবং বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করা সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী “সেঙ্গোল” হাতে নিয়ে একটি মিছিলের নেতৃত্ব দেন। মিছিলটি নতুন পার্লামেন্টের দিকে যাত্রা করেছিল যেখানে মোদী লোকসভা কক্ষে স্পিকারের চেয়ারের ডানদিকে একটি উত্সর্গীকৃত জায়গায় “সেঙ্গোল” স্থাপন করেছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নতুন পার্লামেন্ট নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা নির্বাচিত কর্মীদের সম্মাননাও দেন। সেঙ্গোলটি রৌপ্য ও সোনার তৈরি। পাঁচ ফুট লম্বা রাজদণ্ডটি লর্ড মাউন্ট ব্যাটেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর কাছে 14 আগস্ট, 1947-এ হস্তান্তর করেছিলেন। ভারত সরকারের মতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক হিসাবে সেঙ্গোলটি ব্যবহার করা হয়। সেঙ্গোল, যা প্রাচীনকালের তামিল রাজ্যগুলির শাসনের প্রতীক এবং আগে এটি এলাহাবাদ যাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছিল।
ভারতের নতুন পার্লামেন্ট সম্পর্কে কিছু তথ্য
- নতুন পার্লামেন্টটি নয়াদিল্লির সেন্ট্রাল ভিস্তা এলাকায় অবস্থিত এবং ভারতীয় পার্লামেন্টের ক্রমবর্ধমান লোকসংখ্যা এবং চাহিদা পূরণ করার উদ্দেশ্যে ডিজাইন করা হয়েছে ৷ নতুন পার্লামেন্টটি ভবিষ্যতের প্রয়োজনীয়তাগুলির কথা চিন্তা করে ডিজাইন করা হয়েছে। যেখানে লোকসভার 888 জন সদস্যের আসন রয়েছে এবং রাজ্যসভায় 384 জন সদস্যের আসন করা হয়েছে।
- নতুন ভবনটিতে অত্যাধুনিক অডিও-ভিজ্যুয়াল সিস্টেমে সজ্জিত ছয়টি কমিটি রুমও রয়েছে। বর্তমান কাঠামোর তুলনায় এটি অনেক উন্নতএবং এখানে মাত্র তিনটি কক্ষ রয়েছে।
- পুরানো পার্লামেন্টের বৃত্তাকার আকৃতির বিপরীত দিকে নতুন ভবনটি প্রায় 65,000 বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে।
বিল্ডিংটি আমেদাবাদ-বেসড HCP ডিজাইন, প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছে এবং টাটা প্রজেক্টস লিমিটেড নির্মাণ করেছে। চার তলা ভবনটি নির্মাণ করতে আনুমানিক 970 কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
পুরনো এবং নতুন পার্লামেন্টের মধ্যে পার্থক্য
- আসন সংখ্যা: নতুন পার্লামেন্টের লোকসভায় 888 জন সংসদ সদস্য (MP) বসতে পারবে যা বর্তমান লোকসভার আসন সংখ্যার অনেক বেশী। একইভাবে, নতুন রাজ্যসভায় ভবিষ্যতের প্রয়োজনের জন্য 384টি আসনের ব্যবস্থা রয়েছে।
- ময়ূর এবং পদ্ম ফুলের থিম: নতুন পার্লামেন্টের লোকসভা এবং রাজ্যসভা আলাদা আলাদা থিম প্রদর্শন করবে। লোকসভা জাতীয় পাখি ময়ূরকে প্রদর্শন করেছে এবং রাজ্যসভা জাতীয় ফুল পদ্মকে প্রদর্শন করছে।
- সেন্ট্রাল হলের অনুপস্থিতি: পুরানো পার্লামেন্টের মতো নতুন ভবনে সেন্ট্রাল হল থাকবে না। পরিবর্তে, নতুন পার্লামেন্টের লোকসভা হলটি যৌথ অধিবেশনের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
- ভূমিকম্প প্রতিরোধক নির্মাণ: দিল্লির বর্ধিত ভূমিকম্পের কার্যকলাপ বিবেচনা করে ভূমিকম্প প্রতিরোধক অনুযায়ী নতুন পার্লামেন্ট তৈরি করা হয়েছে।
- আধুনিক প্রযুক্তিগত সুবিধা: হাউসের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নতুন পার্লামেন্টের প্রতিটি MP এর আসনের সামনে একটি মাল্টিমিডিয়া ডিসপ্লে দেওয়া হয়েছে।
- কমিটি রুমগুলির সুবিধা: নতুন পার্লামেন্টের অত্যাধুনিক অডিও-ভিজ্যুয়াল সিস্টেমের সাথে সজ্জিত উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি সংখ্যক কমিটি রুম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই মানোন্নয়নের ফলে সংসদীয় কমিটিগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সহজ হবে।
- গণমাধ্যমের সুবিধা: নতুন সংসদ ভবনে গণমাধ্যমের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য মোট 530টি আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উভয় হাউসে সাধারণ জনগণের জন্য সংসদীয় কার্যধারা প্রত্যক্ষ করার জন্য গ্যালারি তৈরী করা হয়েছে।